আয়াতের প্রতিটি অংশের তাফসীর
وَ لَقَدۡ جَآءَکُمۡ مُّوۡسٰی بِالۡبَیِّنٰتِ
আর অবশ্যই মূসা তোমাদের কাছে স্পষ্ট নিদর্শনসহ এসেছিলেন।
হযরত মূসা (আ.) ইহুদিদের নিকট নবুয়তের প্রমাণস্বরূপ বহু মুজিযা নিয়ে এসেছিলেন—যেমন লাঠির সাপ হয়ে যাওয়া, সমুদ্র চিরে যাওয়া ইত্যাদি।
ثُمَّ اتَّخَذۡتُمُ الۡعِجۡلَ مِنۡۢ بَعۡدِهٖ
এরপর তোমরা তাঁর অনুপস্থিতিতে বাছুরকে উপাস্য হিসেবে গ্রহণ করেছিলে।
মূসা (আ.) তুর পাহাড়ে যান ওহী গ্রহণ করতে। তার অনুপস্থিতিতে সামরীর ধোঁকায় পড়ে তারা একটি সোনালী বাছুর তৈরি করে তার পূজা শুরু করে।
وَ اَنۡتُمۡ ظٰلِمُوۡنَ
আর তোমরা ছিলে জালিম।
আল্লাহর একত্ব অস্বীকার করে বস্তুর পূজা করা ছিল চরম জুলুম—আত্মার ওপর, সমাজের ওপর ও আল্লাহর প্রতি।
এই আয়াতে ইহুদি জাতির এক বড় গুনাহের কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তারা একদিকে নবী মূসা (আ.)-এর মতো মহান রসূলের উম্মত ছিল, যিনি অনেক মুজিযা দেখিয়েছিলেন। অন্যদিকে তারা এতটাই চরমভাবে পথভ্রষ্ট হয়ে গিয়েছিল যে, তাঁর সাময়িক অনুপস্থিতিতে একটি সোনার বাছুর বানিয়ে তার পূজা শুরু করে। এ ঘটনা প্রমাণ করে, তারা আল্লাহর দেয়া নিদর্শন সত্ত্বেও ঈমানদার থাকেনি বরং শিরকে লিপ্ত হয়েছে।
বড় বড় নিদর্শন দেখলেও মানুষ বিভ্রান্ত হতে পারে, যদি ঈমান দুর্বল হয়।
সত্য নবী ও ওহী থাকা সত্ত্বেও শয়তানি চক্রান্তে মানুষ পথভ্রষ্ট হয়।
শিরক সর্বশ্রেষ্ঠ জুলুম।
পূর্ববর্তী উম্মতদের ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত—নবীপ্রাপ্ত জাতিও গোমরাহ হতে পারে।
এই আয়াত মদিনার ইহুদিদের উদ্দেশ্যে নাযিল হয়েছে, যারা নিজেদের নবী মূসা (আ.)-এর অনুসারী বলে দাবি করত। কিন্তু তারা তাঁর প্রকৃত শিক্ষাকে অনুসরণ করেনি। বরং পূর্বপুরুষরা তাঁর অনুপস্থিতিতে বাছুর পূজা করে শিরকে লিপ্ত হয়েছিল। আল্লাহ এই আয়াতের মাধ্যমে তাদের সেই গুনাহ স্মরণ করিয়ে দেন যেন তারা নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রতি ঈমান আনতে অনুপ্রাণিত হয়।