● اُولٰٓئِکَ
– "তাদের কথাই বলা হচ্ছে":
এটি পূর্ববর্তী আয়াতে উল্লিখিত মুনাফিকদের প্রতি ইঙ্গিত। তারা মুখে মুসলমান কিন্তু অন্তরে কপট।
● الَّذِیۡنَ اشۡتَرَوُا الضَّلٰلَۃَ بِالۡهُدٰی
– "যারা হিদায়াতের পরিবর্তে গোমরাহী কিনে নিয়েছে":
এখানে "اشتروا" অর্থ "ক্রয় করেছে", এবং তা রূপকভাবে ব্যবহৃত হয়েছে।
অর্থাৎ, তারা গোমরাহীকে পছন্দ করে নিয়েছে, আর হিদায়াত (সত্যপথ) ছেড়ে দিয়েছে।
তারা নিজেরাই হিদায়াতকে ত্যাগ করে বিভ্রান্তিকে গ্রহণ করেছে, যেন এটি একটি লেনদেন।
● فَمَا رَبِحَتۡ تِّجَارَتُهُمۡ
– "তাদের এই বাণিজ্যে কোনো লাভ হয়নি":
এখানে আল্লাহ তাদের কুফর ও মুনাফিকির কাজকে ‘তিজারত’ বা বাণিজ্যের সাথে তুলনা করেছেন।
কিন্তু এই বাণিজ্য ক্ষতিসাধক, কেননা তারা হিদায়াত হারিয়ে গোমরাহি অর্জন করেছে।
● وَ مَا کَانُوۡا مُهۡتَدِیۡنَ
– "তারা সৎপথপ্রাপ্তও হয়নি":
তারা যেহেতু নিজ ইচ্ছায় হিদায়াত ছেড়ে দিয়েছে, তাই তারা আর কখনোই সঠিক পথে ফেরে না।
আল্লাহ তাদের হৃদয় বন্ধ করে দেন, এবং তারা পথভ্রষ্টতায় অটল থাকে।
এই আয়াতেও মূলত মুনাফিকদের চরিত্র চিত্রিত করা হয়েছে।
তারা এমন এক দল, যারা স্পষ্টভাবে হিদায়াতকে জেনে, বুঝে তা প্রত্যাখ্যান করে গোমরাহীকে বেছে নেয়।
আল্লাহ তাদের এই আচরণকে একটি ক্ষতিসাধক বাণিজ্যের সাথে তুলনা করেছেন।
তারা এমন এক সওদা করে—যাতে মূলধন হারায়, মুনাফাও পায় না।
এর ফলে তারা কখনো সঠিক পথে ফিরে আসে না।
এই আয়াত আমাদের বোঝায়, হিদায়াত ত্যাগ করে কেউ কখনো সফল হতে পারে না।
● হিদায়াত (আল্লাহর পথনির্দেশ) আল্লাহর এক অমূল্য নেয়ামত—এটা কেউ ইচ্ছা করে ত্যাগ করলে তার বড় ক্ষতি হয়।
● যারা সত্য জেনে তা প্রত্যাখ্যান করে, তারা চিরস্থায়ীভাবে গোমরাহিতে পড়ে যায়।
● মুনাফিকি ও দ্বিমুখিতা হলো ক্ষতিসাধক এক সওদা।
● আল্লাহর দ্বীনকে ব্যবসা বা লাভক্ষতির দৃষ্টিতে দেখা এক ভয়ংকর মানসিকতা।
● সৎপথ থেকে সরে গিয়ে কেউ কখনো সফলতা লাভ করতে পারে না।
এই আয়াতটি মদীনায় অবতীর্ণ, এবং এর প্রেক্ষাপট মুনাফিকদের সম্পর্কে।
তারা ইসলামকে বাহ্যিকভাবে গ্রহণ করে, কিন্তু অন্তরে ছিল অন্ধকার।
তারা ইসলামকে সাময়িক লাভের জন্য ব্যবহার করত।
আল্লাহ এই আয়াতে তাদের অবস্থাকে একটি অলাভজনক বাণিজ্যের সাথে তুলনা করেছেন।
তারা নিজেরাই হিদায়াত ছেড়ে দিয়েছে—তাই আর ফিরে আসার সুযোগ নেই, এবং তারা কখনো সৎপথে ফিরবেও না।