আয়াতের প্রতিটি অংশের তাফসীর
فَمَنۡ خَافَ مِنۡ مُّوۡصٍ جَنَفًا اَوۡ اِثۡمًا —
যে ব্যক্তি ঋণগ্রহীতার কাছ থেকে অনিচ্ছাকৃত ভুল (যেমন বেশি আদায়) বা পাপ (অন্যায় আদায়) হওয়ার ভয় পায়, অর্থাৎ নিজের অধিকার রক্ষার জন্য সতর্ক।
فَاَصۡلَحَ بَیۡنَهُمۡ —
সে যদি ঋণদাতা ও ঋণগ্রহীতার মধ্যে সালিশি বা মীমাংসা ঘটায়, শান্তি প্রতিষ্ঠা করে এবং ঋণ সংক্রান্ত যেকোনো বিবাদ মিটিয়ে দেয়।
فَلَاۤ اِثۡمَ عَلَیۡهِ —
তাহলে এমন মীমাংসার মাধ্যমে যে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তার জন্য ওই ব্যক্তির ওপর কোনো গুনাহ বা দোষ নেই।
اِنَّ اللّٰهَ غَفُوۡرٌ رَّحِیۡمٌ —
কারণ আল্লাহ ক্ষমাশীল এবং দয়ালু, যারা ক্ষমা প্রার্থনা করে এবং ন্যায়পরায়ণভাবে আচরণ করে তাদের প্রতি করুণাময়।
এই আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ঋণ বা দেনাদেনার মধ্যে যদি কেউ কোনো ভুল-ত্রুটি বা অন্যায় হওয়ার আশঙ্কা করে এবং এই পরিস্থিতি মীমাংসা করে শান্তি স্থাপন করে, তবে তার ওপর কোনো পাপ নয়। কারণ আল্লাহ গুনাহ ক্ষমাকারী এবং দয়ালু। এই নির্দেশনা সামাজিক সম্পর্কের মধ্যে ন্যায়বিচার বজায় রাখার গুরুত্ব তুলে ধরে এবং দ্বন্দ্ব নিষ্পত্তিতে সদিচ্ছা ও মীমাংসার গুরুত্বের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
১. সামাজিক ও আর্থিক সম্পর্ক মেনে চলার সময় সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
২. দ্বন্দ্বের ক্ষেত্রে মীমাংসা এবং সালিশি করা প্রশংসনীয়।
৩. ন্যায়পরায়ণ ও মীমাংসামূলক আচরণ গুনাহ থেকে রক্ষা করে।
৪. আল্লাহ ক্ষমাশীল এবং দয়ালু, তাই ক্ষমা চাওয়া ও শান্তি প্রতিষ্ঠা গুরুত্বপূর্ণ।
এই আয়াত নাযিল হয়েছিল যখন কিছু ক্ষেত্রে ঋণগ্রহীতাদের সাথে দেনাদেনার বিষয়ে ভুল বোঝাবুঝি বা অন্যায় হতে পারে এই ভয় থেকে মীমাংসা করার প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করতে। ইসলামে ন্যায়বিচার ও সালিশির গুরুত্ব স্পষ্ট করতে এই আয়াত নাযিল হয়েছে।
দলিল:
তাফসীর ইবনে কাসীর, "আল-বাকারা" (২:১৮৩)
তাফসীর আত-তাবারি, "জামি আল-বয়ান" খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ৩৭৫-৩৭৭