আয়াতের প্রতিটি অংশের তাফসীর
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا — হে ঈমানদারগণ! এখানে আল্লাহ তা'আলা সরাসরি মুমিনদের উদ্দেশে আহ্বান করেছেন, যা নির্দেশ করে যে এ আদেশ শুধুমাত্র বিশ্বাসীদের জন্য।
کُلُوۡا مِنۡ طَیِّبٰتِ مَا رَزَقۡنٰکُمۡ — তোমাদেরকে যে রিযিক দিয়েছি, তার উত্তম ও হালাল অংশ থেকে আহার করো। "ত্বাইয়িবাত" বলতে হালাল, পবিত্র ও কল্যাণকর খাদ্য বোঝানো হয়েছে। এর মধ্যে নিষিদ্ধ ও অপবিত্র বস্তু নেই।
وَ اشۡکُرُوۡا لِلّٰهِ — আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ হও। এখানে শোকর অর্থ শুধু মুখে বলার নাম নয়; বরং অন্তরে বিশ্বাস, মুখে প্রশংসা এবং আমলে অনুসরণ অন্তর্ভুক্ত।
اِنۡ کُنۡتُمۡ اِیَّاهُ تَعۡبُدُوۡنَ — যদি তোমরা কেবল আল্লাহকেই উপাসনা কর, তবে তাঁর দেয়া নেয়ামতের জন্য কৃতজ্ঞ হও। ইবাদত ও শোকর একে অপরের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত।
এই আয়াতটি মুসলিমদের প্রতি একটি নির্দেশনা, যেন তারা আল্লাহর দেয়া হালাল ও পবিত্র রিযিক ভোগ করে এবং এর জন্য তাঁকে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে। রিযিক ভোগ করা যেমন ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত, তেমনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করাও ইমানের গুরুত্বপূর্ণ শাখা। যারা সত্যিকার অর্থে আল্লাহর ইবাদত করে, তারা কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করে, কারণ শোকর ইবাদতের অন্যতম রূপ।
১. আল্লাহ তাআলা আমাদের রিযিক দানকারী — তাই কৃতজ্ঞতা একান্ত জরুরি।
২. কেবল হালাল ও পবিত্র জিনিস ভোগ করাই মুমিনের বৈশিষ্ট্য।
৩. শোকর প্রকাশ ইবাদতের অংশ এবং তা মুখে, অন্তরে ও কর্মে হতে হবে।
৪. প্রকৃত ইবাদতকারীর পরিচয়: সে রিযিক ভোগ করে এবং রাব্বের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকে।
তাফসীর ইবনে কাসীরের বর্ণনা অনুযায়ী, পূর্ববর্তী আয়াতে (আল-বাকারা: ১৬৮) সাধারণভাবে সকল মানুষের প্রতি হালাল ও পবিত্র খাদ্য গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। এরপর এ আয়াতে মুমিনদেরকে আলাদাভাবে সম্বোধন করে হালাল খাদ্য খাওয়ার নির্দেশ প্রদান করা হয় এবং আল্লাহর কৃতজ্ঞতার নির্দেশ দেওয়া হয়।
এটা ইঙ্গিত করে যে ঈমানদারদের জন্য খাদ্য নির্বাচনে আরও বেশি সচেতনতা জরুরি।
দলিল:
– ইবনে কাসীর, তাফসীরুল কুরআনিল আজীম, সূরা আল-বাকারা ১৭২
– তাফসীর আত-তাবারী, ২/১৭৪