আয়াতের প্রতিটি অংশের তাফসীর
وَ اِذَا قِیۡلَ لَهُمُ اتَّبِعُوۡا مَاۤ اَنۡزَلَ اللّٰهُ —
এখানে বর্ণনা করা হয়েছে যে যখন মুসলিম সম্প্রদায় বা নবীজিকে বলানো হয় আল্লাহর অবতীর্ণ বিধান ও কোরআনের নির্দেশ অনুসরণ করতে, তখন।
قَالُوۡا بَلۡ نَتَّبِعُ مَاۤ اَلۡفَیۡنَا عَلَیۡهِ اٰبَآءَنَا —
তারা উত্তর দেয়, না, আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদের (আবাদের) অনুসরণ করব। অর্থাৎ পূর্বপুরুষদের কুসংস্কার, রীতিনীতি এবং অবৈজ্ঞানিক প্রথাগুলো তারা প্রাধান্য দেয়।
اَوَ لَوۡ کَانَ اٰبَآؤُهُمۡ لَا یَعۡقِلُوۡنَ شَیۡئًا وَّ لَا یَهۡتَدُوۡنَ —
এখানে আল্লাহ প্রশ্ন তোলেন, “তাদের পিতারা যদি কিছু বুঝতো না, বোধশক্তি ও হেদায়েত (সঠিক পথ) না পেতো, তাহলে তারা কেন তাদের অনুসরণ করে?” এটি পূর্বপুরুষদের অজ্ঞতা ও ভুলের প্রতি ইঙ্গিত।
এই আয়াতটি তাদের কুফুরদের মূর্খতা ও অজ্ঞতার দিকে ইঙ্গিত করছে যারা নবীজির নির্দেশের পরিবর্তে পূর্বপুরুষদের ভুল বিশ্বাস অনুসরণ করতো। আল্লাহ তাদের এই অজ্ঞতাকে প্রকাশ করছেন এবং তাদের অনুকরণ করার যুক্তি প্রশ্ন করছেন।
১. অজ্ঞতাপূর্ণ ও অমূলক রীতিনীতি অনুসরণ না করা।
২. আল্লাহর নির্দেশ সর্বোচ্চ এবং তা মেনে চলা অপরিহার্য।
৩. পূর্বপুরুষের ভুল অভ্যাসের প্রতি কেবলমাত্র ঐতিহ্যের কারণে বদ্ধমূল থাকা উচিত নয়।
৪. বুদ্ধিমত্তা ও হেদায়েতের ওপর গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন।
এই আয়াতটি মক্কা সুরার অংশ, যখন নবীজির (সা.) সঙ্গে কুফুররা কোরআনের নির্দেশাবলীর প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করছিল। তারা পূর্বপুরুষদের অনুকরণ করতে চেয়েছিল এবং নবীজির নতুন বিধানকে প্রত্যাখ্যান করত। আয়াতটি তাদের এই মনোভাবের বিরুদ্ধে নাযিল হয়।
দলিল:
তাফসীর ইবনে কাসির, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ৫৮
তাফসীর তাবারি, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ২৪২
সহীহ বুখারি, হাদিস নম্বর ৩৮৫৮