আয়াতের প্রতিটি অংশের তাফসীর
وَقَالَ الَّذِينَ اتَّبَعُوا لَوْ أَنَّ لَنَا كَرَّةً فَنَتَبَرَّأَ مِنْهُمْ كَمَا تَبَرَّؤُوا مِنَّا —
যারা পথ অনুসরণ করেছিল (অনুসারীরা) বলল, "আমাদেরও যদি আবার সুযোগ দেওয়া হতো, তাহলে আমরা তাদের থেকে দূরে সরে যেতাম যেভাবে তারা আমাদের থেকে সরে গেছে।" তারা এমন অবস্থায় নিজেকে রক্ষা করতে চায় এবং নিজেদেরকে আলাদা করতে চায়। কিন্তু তাদের এই মনোভাব তাদের ভবিষ্যৎ শাস্তির কারণ হবে।
كَذَٰلِكَ يُرِيهِمُ اللَّهُ أَعْمَالَهُمْ حَسَرَاتٍ عَلَيْهِمْ —
এভাবেই আল্লাহ তাদের নিজেদের আমল তাদের সামনে অনুতাপ ও দুঃখ স্বরূপ প্রদর্শন করেন। তারা তাদের পাপের জন্য অত্যন্ত দুঃখ পাবে, কারণ তারা বুঝবে তাদের কাজ কতটা ক্ষতিকর ছিল।
وَمَا هُم بِخَارِجِينَ مِنَ النَّارِ —
এবং তারা আগুন থেকে মুক্ত হতে পারবে না। তাদের জন্য শাস্তির দ্বার বন্ধ, তারা সেই শাস্তি থেকে পরিত্রাণ পাবে না।
এই আয়াতে যারা ভুল পথে ছিল তাদের অনুগামীদের মনোভাব বর্ণিত হয়েছে। তারা তাদের পথ প্রদর্শকদের প্রতি অবিশ্বাস ও বিরক্তি প্রকাশ করে, আবার সুযোগ পেলে নিজেদেরও সরে যাবে। আল্লাহ তাদের আমল তাদের সামনে এমনভাবে প্রকাশ করবেন যা তাদের জন্য অনুতাপ ও দুঃখের কারণ হবে। এটি ইঙ্গিত দেয় যে পাপের পরিণতি কঠোর এবং পরিত্রাণ নেই।
১. যারা পথ ভুলে যায় তারা অনুগামীদের প্রতিও বিশ্বাসযোগ্য নয়।
২. পাপ করলে এর ফলে অনুতাপ ও হারে পড়তে হয়।
৩. আল্লাহ তাঁর বান্দাদের আমল বিচার করেন এবং প্রতিটি কাজের ফল দেখান।
৪. শাস্তি থেকে মুক্তির জন্য সততা ও সৎপথে চলা আবশ্যক।
এই আয়াতটি মক্কা নববীর কালীন সময়ে নাযিল হয়েছে, যখন মুসলমানদের মধ্যে বিভাজন ও সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছিল। কিছু অনুসারী পথভ্রষ্টদের থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিল কিন্তু তাদের সেই সুযোগ ছিল না। বিভিন্ন তাফসীর যেমন তাফসীর ইবনে কাসীর এই প্রেক্ষাপট ব্যাখ্যা করে।