আয়াতের প্রতিটি অংশের তাফসীর
إِذْ تَبَرَّأَ الَّذِينَ اتُّبِعُوا مِنَ الَّذِينَ اتَّبَعُوا —
যখন যারা অনুসরণ করা হয়েছিল (অর্থাৎ মুরশিদগণ বা নেতৃবৃন্দ) নিজেদের অনুসারীদের থেকে আলাদা ও দূরে সরে গেলো। তারা তাদের গন্ডি থেকে নিজেকে মুক্ত করলো, কারণ অনুসারীরা তাদের ওপর থেকে আল্লাহর শাস্তি দেখে ভীত ও বিচলিত হয়। এই ঘটনা শির্ক বা ভুল পথে যাওয়ার পরিণতি হিসেবে দেখা যায়, যেখানে নেতা ও অনুসারীদের সম্পর্ক ছিন্ন হয়।
وَرَأَوُا الْعَذَابَ —
তারা আল্লাহর শাস্তি প্রত্যক্ষ করলো, যা তাদের ভয়ভীতির কারণ হলো। এই শাস্তি শারীরিক ও মানসিক কষ্টদায়ক ছিল।
وَتَقَطَّعَتْ بِهِمُ الْأَسْبَابُ —
এতে তাদের সম্পর্ক, বংশ ও বন্ধন ছিন্ন-ভিন্ন হয়ে গেলো। যেমন পরিবার, সমাজ ও দল বিভক্ত হয়ে গেল। এটি শাস্তির প্রভাব ও সমাজের বিচ্ছিন্নতার প্রতীক।
এই আয়াতে আল্লাহ তায়ালা শাস্তির দৃশ্য বর্ণনা করেছেন যখন তারা যারা পথ প্রদর্শক ছিল তাদের অনুসারীদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। কারণ তারা শাস্তি দেখে নিজেদের রক্ষা করতে চায়। এটি দেখায় যে ভুল পথ অনুসরণ করলে, অবশেষে সম্পর্ক ও সমর্থনই চলে যায়। শাস্তি মানুষের মাঝে ভয় ও বিভক্তি সৃষ্টি করে এবং একসময়ের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কও দুর্বল হয়ে পড়ে।
১. নেতৃবৃন্দ ও অনুসারীদের মধ্যে সম্পর্ক ভালো না হলে সবারই ক্ষতি হয়।
২. আল্লাহর শাস্তি এতটাই ভয়ঙ্কর যে তা সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করে দেয়।
৩. সঠিক পথ অনুসরণ ও ঈমানের গুরুত্ব অপরিসীম।
৪. ভুল পথে গেলে একাকিত্ব ও বিচ্ছিন্নতা আসে।
এই আয়াতটি মক্কা বা মদীনার প্রথম কালীন সময়ে নাযিল হয়েছে, যখন নবী করিম (সা.)-এর অনুসারীদের মধ্যে বিভ্রাট দেখা দেয় এবং শির্কপন্থীরা আল্লাহর শাস্তি দেখতে পেয়ে তাদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বিভিন্ন তাফসীর যেমন তাফসীর ইবনে কাসীর এতে বিস্তারিত আলোচনা করেছে।