আয়াতের প্রতিটি অংশের তাফসীর
إِنَّ الَّذِينَ يَكْتُمُونَ مَا أَنْزَلْنَا مِنَ الْبَيِّنَاتِ وَالْهُدَى —
যারা আল্লাহর নাযিলকৃত স্পষ্ট নিদর্শন ও সঠিক পথপ্রদর্শন গোপন রাখে, অর্থাৎ সত্য আড়াল করে বা প্রকাশে বাধা দেয়, তারা কঠোর দণ্ডের যোগ্য।
مِن بَعْدِ مَا بَيَّنَّاهُ لِلنَّاسِ فِي الْكِتَابِ —
যখন এই নিদর্শনসমূহকে মানুষের কাছে আল্লাহর পক্ষ থেকে পরিষ্কারভাবে বর্ণনা করা হয়েছে কিতাবে (কুরআনে) এবং তারপরও কেউ তা গোপন করে রাখে, তখন তাদের দণ্ড আরও কঠোর।
أُولَٰئِكَ يَلْعَنُهُمُ اللَّهُ وَيَلْعَنُهُمُ اللَّاعِنُونَ —
এসব ব্যক্তিদের ওপর আল্লাহ এবং সমস্ত লাঞ্ছনাকারীরা (অর্থাৎ যারা অন্যায় বলে অভিহিত করে) অভিশাপ নামান। অর্থাৎ তারা সামাজিক ও আল্লাহর পক্ষ থেকে লাঞ্ছিত।
এই আয়াতে আল্লাহ তায়ালা কঠোরভাবে নিন্দা করছেন তাদের যারা কুরআনের বা ইসলামের স্পষ্ট নিদর্শন এবং পথপ্রদর্শন গোপন করে রাখে বা ধামাচাপা দেয়। আল্লাহ তায়ালা ইচ্ছা করেছেন যাতে মানুষ স্পষ্টভাবে আলোর পথে চলতে পারে, কিন্তু যারা এই আলোকপাতকে বাধা দেয় তারা মহান শাস্তির যোগ্য। তাদের ওপর আল্লাহর অভিশাপ ও অন্যান্য লাঞ্ছনাকারীদের অভিশাপ নেমে আসে। এটি এক ধরনের সামাজিক ও আধ্যাত্মিক নিষেধাজ্ঞা।
কুরআনের সত্য ও স্পষ্ট নিদর্শন গোপন রাখা বা লুকানো বড় পাপ।
আল্লাহ ও সমাজের অভিশাপ এমন কাজের জন্য নির্ধারিত।
সৎ ও সঠিক পথে মানুষকে পরিচালিত করার দায়িত্ব মুসলমানদের।
ইসলামের বার্তা স্পষ্টভাবে ছড়িয়ে দেওয়া জরুরি।
এই আয়াতটি নাযিল হয়েছিল এমন কিছু লোকদের বিরুদ্ধে যারা আল্লাহর পক্ষ থেকে নাযিল হওয়া স্পষ্ট নির্দেশ ও শিক্ষা গোপন রাখত বা বিকৃত করত। তারা নিজেদের স্বার্থে সত্য লুকাত বা মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করত। আল্লাহ তাদের জন্য কঠোর শাস্তির ঘোষণা দেন।