আয়াতের প্রতিটি অংশের তাফসীর
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوا —
হে মুমিনগণ! এই শব্দগুচ্ছ দিয়ে আল্লাহ তাআলা বিশ্বাসীদেরকে সরাসরি সম্বোধন করেছেন, যা নির্দেশ করে যে নিম্নোক্ত উপদেশ বিশেষভাবে ঈমানদারদের জন্য প্রযোজ্য।
اسۡتَعِیۡنُوۡا بِالصَّبۡرِ وَ الصَّلٰوۃِ —
তোমরা সাহায্য চাও ধৈর্য ও নামাযের মাধ্যমে। এখানে ধৈর্য বলতে শুধু বিপদে সহনশীলতা নয়, বরং পাপ থেকে বিরত থাকা, আল্লাহর হুকুম পালনে অটল থাকা এবং দুঃসময়ে হতাশ না হওয়াও বোঝানো হয়েছে। আর সালাত (নামায) হলো আল্লাহর সাহায্য পাওয়ার অন্যতম প্রধান মাধ্যম — এটি বান্দাকে আল্লাহর নৈকট্যে নিয়ে যায়।
اِنَّ اللّٰهَ مَعَ الصّٰبِرِیۡنَ —
নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন। এই অংশে আল্লাহ তাআলা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন যে, যারা ধৈর্য ধরে, আল্লাহ তাদের পাশে থাকেন — সাহায্য, সহায়তা ও রহমতের মাধ্যমে।
এই আয়াতটি মুসলমানদের শেখায় কীভাবে কষ্ট, বিপদ, যুদ্ধ বা যেকোনো সংকটে নিজেদের প্রস্তুত রাখতে হয়। আল্লাহ তাআলা বলেছেন, তোমরা যদি কঠিন অবস্থায় ধৈর্য ধরো এবং আল্লাহর সঙ্গে সংযুক্ত থাকার জন্য নিয়মিত নামায পড়ো, তবে তাঁর সাহায্য অবশ্যম্ভাবী। এ আয়াত ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ নীতি শিক্ষা দেয় — বিপদের সময় ঈমান ও আমলের উপর দৃঢ় থাকতে হবে।
ধৈর্য ও নামায আল্লাহর সাহায্য পাওয়ার মাধ্যম।
আল্লাহ সবসময় ধৈর্যশীলদের পাশে থাকেন।
কষ্ট ও দুঃখে আতঙ্কিত না হয়ে আল্লাহর উপর ভরসা করতে হবে।
ঈমানদারদের জীবনে ধৈর্য একটি অপরিহার্য গুণ।
নামায কেবল ইবাদত নয়, বরং এটি আত্মিক প্রশান্তির উৎস।
এই আয়াতটি মক্কা থেকে মদীনায় হিজরতের পর মুসিবতের সময় নাজিল হয়। মুসলমানদের ওপর কষ্ট, যুদ্ধ ও নির্যাতন নেমে এসেছিল। তখন আল্লাহ তাআলা তাদেরকে শিক্ষা দিলেন — ধৈর্য ধরো, নিয়মিত নামায আদায় করো, এবং আল্লাহর সাহায্যের জন্য প্রস্তুত থাকো। এটি মুসলিম উম্মাহকে কঠিন সময়ে মনোবল ধরে রাখার একটি মহৎ দিকনির্দেশনা দেয়।