সূরা: ২. আল-বাকারা (اَلْبَقَرَةِ)
১৪১ নং আয়াতের তাফসীর

١٤١ - تِلۡکَ اُمَّۃٌ قَدۡ خَلَتۡ ۚ لَهَا مَا کَسَبَتۡ وَ لَکُمۡ مَّا کَسَبۡتُمۡ ۚ وَ لَا تُسۡـَٔلُوۡنَ عَمَّا کَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ
উচ্চারণ: তিলকা উম্মাতুন কাদ খালাত্ লাহা মা কাসাবত্ ও লাকুম্ মা কাসাবতুম্ ও লা তুসালুন আম্মা কানু ইয়ামালুন।
অনুবাদ: সেটা ছিল একটি উম্মত, যারা বিগত হয়েছে। তারা যা অর্জন করেছে, তা তাদের জন্য আর তোমরা যা অর্জন করেছ তা তোমাদের জন্য। আর তারা যা করত, সে সম্পর্কে তোমাদেরকে জিজ্ঞাসা করা হবে না।

তাফসীর

আয়াতের প্রতিটি অংশের তাফসীর

تِلۡکَ اُمَّۃٌ قَدۡ خَلَتۡ
এখানে পূর্ববর্তী এক বা একাধিক জাতির বর্ণনা দেওয়া হয়েছে যারা সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের দায়িত্ব পালন শেষ করেছে এবং ইতিহাসে চলে গেছে।

لَهَا مَا کَسَبَتۡ
তাদের অর্জিত ফল বা পুরস্কার তাদের জন্য নির্ধারিত থাকবে, অর্থাৎ তারা তাদের কর্মের ফল ভোগ করবে।

وَلَکُمۡ مَّا کَسَبۡتُمۡ
তোমরা তোমাদের কর্মের ফল নিজেরাই গ্রহণ করবে, আলাদা আলাদা হিসাব থাকবে।

وَلَا تُسۡـَٔلُوۡنَ عَمَّا کَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ
তোমাদেরকে তাদের কাজের জন্য জিজ্ঞাসা করা হবে না, অর্থাৎ প্রত্যেক ব্যক্তি নিজ নিজ কাজের জন্য দায়ী।


আয়াতের ব্যাখ্যা

এই আয়াতে আল্লাহ পূর্ববর্তী জাতিগুলোকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন যারা তাদের আমল ও কর্মের ভিত্তিতে বিচার পেয়েছে এবং তাদের দায়িত্ব শেষ হয়ে গেছে। প্রত্যেক জাতি নিজের আমল অনুযায়ী বিচার পাবে এবং অন্য জাতির জন্য দায়ী হবে না। এ শিক্ষা মানুষের মধ্যে ব্যক্তিগত দায়িত্ববোধ ও আমল করার গুরুত্ব বুঝায়।


আয়াতের শিক্ষা

  • প্রত্যেক জাতি ও ব্যক্তি নিজের কর্মের জন্য দায়ী।

  • পূর্ববর্তী জাতিদের ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিতে হবে।

  • অন্যদের কাজের জন্য কাউকে দায়ী করা হবে না।

  • আল্লাহর বিচার ন্যায়পরায়ণ ও নিস্পক্ষ।


নাযিলের প্রেক্ষাপট (সাবাবুন নুজুল)

মক্কায় মুশরিকদের মধ্যে পূর্বপুরুষদের সম্পর্কে বিতর্ক থাকাকালীন এই আয়াত নাযিল হয়, যা প্রতিটি জাতির আলাদা আলাদা হিসাব এবং দায়িত্বের বিষয় স্পষ্ট করে। নবী ও মুসলমানদের জন্য এটি এক শক্তিশালী শিক্ষা হিসেবে কাজ করে যে, প্রত্যেককে নিজের আমল বিচার করতে হবে।


তাফসীরে: