আয়াতের প্রতিটি অংশের তাফসীর
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا —
হে যারা ঈমান এনেছো! আল্লাহ এখানে সরাসরি তাদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছেন যারা সত্যিকারের বিশ্বাস স্থাপন করেছে।
لَا تَقُوۡلُوۡا رَاعِنَا —
এখানে 'রাআনাহ' (راعنا) শব্দটি একটি আরবি শব্দ, যার অর্থ 'আমাদের দেখো' বা 'আমাদের দেখাশোনা করো'। কিন্তু কিছু কুফর ছিল যারা এটিকে 'রাইনা' অর্থাৎ 'আমাদের ভুয়া বলো' বা 'আমাদের উপহাস করো' হিসেবে বিকৃতভাবে ব্যবহার করত। তাই আল্লাহ তাদের নিষেধ করছেন, যেন তারা এই শব্দটি ব্যবহার না করে।
وَقُوۡلُوا انۡظُرۡنَا وَ اسۡمَعُوۡا —
অর্থাৎ, তোমরা বলবে 'অনজুরনা' যার অর্থ 'আমাদের দেখো' এবং 'শোনো'। এখানে শব্দ পরিবর্তনের মাধ্যমে একটি সম্মানজনক ও স্পষ্ট আবেদন করা হয়েছে যাতে কোনো ভুল ব্যাখ্যার সুযোগ না থাকে।
وَلِلۡکٰفِرِیۡنَ عَذَابٌ اَلِیۡمٌ —
অর্থাৎ, যারা অবিশ্বাসী তাদের জন্য কঠোর ও যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছে। এটি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
এই আয়াতে ঈমানদারদের প্রতি নির্দেশ দেয়া হয়েছে তাদের ভাষায় সতর্কতা অবলম্বন করতে। যেহেতু কিছু মানুষ ‘রাআনাহ’ শব্দটিকে অপব্যাখ্যা করে ব্যবহার করত, তাই আল্লাহ তাদের অন্য শব্দ ‘অনজুরনা’ ব্যবহার করতে বলেন, যা স্পষ্ট এবং সম্মানজনক। একই সাথে এই আয়াত কুফরদের কঠোর শাস্তির কথা ঘোষণা করে, যা ঈমানদারদের জন্য সতর্কবার্তা।
আমাদের কথা বলার ধরনে সতর্কতা থাকা জরুরি, বিশেষ করে ধর্মীয় বা সামাজিক বিষয় নিয়ে। ভাষার ভুল ব্যাখ্যা থেকে দূরে থাকতে হবে যাতে অপব্যাখ্যার সুযোগ না থাকে। এছাড়া, যারা অবিশ্বাসী তাদের জন্য আল্লাহর শাস্তি ভয়ঙ্কর, তাই আমাদের বিশ্বাস আরও দৃঢ় ও সতর্ক হতে হবে।
এই আয়াত নাযিল হয়েছিল যখন মক্কাবাসীরা এই শব্দ ‘রাআনাহ’ ব্যবহার করে মুহাম্মদ (সাঃ) এবং মুসলিমদের অবমাননা করত। তারা এই শব্দটি বিকৃত অর্থে ব্যবহার করায় আল্লাহ তাদেরকে এই ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে বললেন এবং একটি সম্মানজনক শব্দ ‘অনজুরনা’ ব্যবহারের নির্দেশ দিলেন।