আয়াতের প্রতিটি অংশের তাফসীর
کُتِبَ عَلَیۡکُمُ الۡقِتَالُ وَ هُوَ کُرۡهٌ لَّکُمۡ
তোমাদের উপর যুদ্ধ ফরজ করা হয়েছে, যদিও তা তোমাদের কাছে অপছন্দনীয় — অর্থাৎ ইসলামের রক্ষায় যুদ্ধ কখনো কখনো অপরিহার্য, যদিও মানুষ স্বভাবতঃ তা পছন্দ করে না।
وَ عَسٰۤی اَنۡ تَکۡرَهُوۡا شَیۡئًا وَّ هُوَ خَیۡرٌ لَّکُمۡ
হতে পারে, তোমরা কোনো কিছু অপছন্দ করো অথচ তাতেই তোমাদের কল্যাণ রয়েছে — যেমন যুদ্ধ, যা কষ্টকর হলেও আত্মরক্ষা ও ন্যায়ের প্রতিষ্ঠার জন্য দরকারি।
وَ عَسٰۤی اَنۡ تُحِبُّوۡا شَیۡئًا وَّ هُوَ شَرٌّ لَّکُمۡ
আবার হতে পারে, তোমরা কোনো কিছু ভালোবাসো অথচ তাতে তোমাদের অকল্যাণ রয়েছে — যেমন জুলুমকারীর সঙ্গে আপস বা যুদ্ধ এড়িয়ে চলা।
وَ اللّٰهُ یَعۡلَمُ وَ اَنۡتُمۡ لَا تَعۡلَمُوۡنَ
আল্লাহ জানেন, আর তোমরা জানো না — অর্থাৎ মানুষের জ্ঞান সীমিত, কিন্তু আল্লাহর হিকমত সর্বজ্ঞ।
আয়াতটি মুসলমানদের বুঝিয়ে দিচ্ছে যে কখনো কখনো কঠিন ও অপছন্দনীয় কাজ যেমন যুদ্ধ — কেবল আত্মরক্ষা বা ন্যায়ের প্রতিষ্ঠার জন্য ফরজ হয়। যদিও মানুষ এসবকে কষ্টকর মনে করে, তবুও তা তাদের জন্য কল্যাণকর। এই আয়াত আমাদের শেখায়— প্রকৃত ভালো-মন্দ জানার ক্ষমতা একমাত্র আল্লাহর।
ইসলাম রক্ষার জন্য কখনো কখনো যুদ্ধ ফরজ হয়।
যা আমরা অপছন্দ করি, তাতেই আল্লাহ আমাদের কল্যাণ রাখেন।
মানুষ নিজের ভালো-মন্দ সবসময় সঠিকভাবে বুঝতে পারে না।
আল্লাহর হুকুমে বিশ্বাস রাখা এবং তাঁর ওপর ভরসা করা উচিত।
আত্মত্যাগ ছাড়া ঈমান রক্ষা সম্ভব নয়।
এই আয়াত বদরের যুদ্ধের প্রাক্কালে মদিনায় নাজিল হয়। সাহাবীরা প্রথমে যুদ্ধ করতে অনিচ্ছুক ছিলেন, তখন আল্লাহ তা’আলা যুদ্ধের প্রয়োজনীয়তা এবং এতে গোপন কল্যাণ বোঝাতে এই আয়াত নাজিল করেন।