 
                            ১. আয়াতের প্রতিটি অংশের বিস্তারিত তাফসীর
● الرَّحْمَٰنِ
আল্লাহর একটি গুণবাচক নাম। "রহমত" শব্দমূল থেকে এসেছে, যার অর্থ দয়া করা।
"الرَّحْمَٰنِ" দ্বারা বোঝানো হয় এমন এক দয়ালু সত্তা যিনি তাঁর সৃষ্টির প্রতি সীমাহীন দয়া ও অনুগ্রহ বর্ষণ করেন।
এই দয়া সর্বজনীন—বিশ্বাসী, অবিশ্বাসী, মানুষ, পশুপাখি, প্রকৃতি—সব কিছুর উপর বিস্তৃত।
এটি আল্লাহর সত্তাগত গুণ, যার প্রভাব সারা বিশ্বজুড়ে প্রতিনিয়ত অনুভূত হয়।
● الرَّحِيمِ
এটিও আল্লাহর আরেকটি গুণবাচক নাম।
"الرَّحِيمِ" বোঝায় এমন দয়া যা বারবার করা হয়, যার প্রভাব গভীর এবং ধারাবাহিক।
এই গুণটি মূলত মুমিনদের জন্য নির্দিষ্ট, যারা ঈমান ও আমলের মাধ্যমে আল্লাহর বিশেষ দয়ার অধিকারী হয়।
এই দয়া দুনিয়া ও আখিরাত—উভয় জগতে প্রকাশ পায়, তবে আখিরাতে এর পূর্ণতা দেখা যাবে।
এই আয়াতটি সূরা ফাতিহার দ্বিতীয় আয়াত "رَبِّ الْعَالَمِينَ"–এর গুণবাচক ব্যাখ্যা।
আল্লাহ কেমন রব? তিনি দয়ায় পরিপূর্ণ, তাঁর দয়ার কোনো সীমা নেই।
তিনি সবার প্রতিপালক হওয়ার পাশাপাশি এমন রব যিনি বান্দার প্রতিটি অবস্থায় করুণা করেন।
"الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ" শব্দ দুটি একত্রে আল্লাহর দয়ার পরিপূর্ণতা বোঝায়—
একটি দয়া যা সবার জন্য, এবং আরেকটি দয়া যা বিশেষভাবে ঈমানদারদের জন্য।
● আল্লাহর দয়া সীমাহীন ও সবার জন্য উন্মুক্ত।
● বান্দা যত বড় গুনাহগারই হোক, আল্লাহর দয়ার দরজা কখনও বন্ধ হয় না।
● আমরা যেন আল্লাহর দয়ার উপর ভরসা করি এবং হতাশ না হই।
● দয়া ও করুণা আমাদের চারিত্রিক গুণ হওয়া উচিত, আল্লাহর গুণের অনুসরণে।
● মুমিনদের উচিত আল্লাহর বিশেষ দয়ার উপযুক্ত হওয়া—তাওবা, ইখলাস ও নেক আমলের মাধ্যমে।
এই আয়াতটি সূরা আল-ফাতিহার অংশ হিসেবে মক্কায় অবতীর্ণ।
এই সূরাটি মূলত আল্লাহর গুণ, প্রশংসা ও তাঁর থেকে হেদায়াত প্রার্থনার ভিত্তি তৈরি করে।
"الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ" এই অংশটি এমন একটি পরিচয় যা মানুষের হৃদয়ে আল্লাহর প্রতি ভয় নয়, ভালোবাসা জাগিয়ে তোলে।
দীনের সূচনা হয় দয়ার মাধ্যমে—এটি ইসলাম ধর্মের ভিত্তি ও সৌন্দর্য।