আয়াতের প্রতিটি অংশের তাফসীর
وَ قَاتِلُوۡا فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰهِ
আর তোমরা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করো
এখানে যুদ্ধের উদ্দেশ্য হলো — আল্লাহর সন্তুষ্টি, দ্বীনের রক্ষা এবং মজলুমদের সাহায্য।
الَّذِیۡنَ یُقَاتِلُوۡنَکُمۡ
তাদের বিরুদ্ধে, যারা তোমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করে
ইসলাম আত্মরক্ষামূলক যুদ্ধের অনুমতি দেয়; যারা মুসলমানদের আক্রমণ করে, তাদের বিরুদ্ধেই যুদ্ধ বৈধ।
وَ لَا تَعۡتَدُوۡا
তবে সীমালঙ্ঘন করোনা
যুদ্ধের ক্ষেত্রেও সীমা আছে — নারী, শিশু, বৃদ্ধ, নিরস্ত্র মানুষ, উপাসনালয়, ফসল, পশু — এসবের ওপর আক্রমণ হারাম।
اِنَّ اللّٰهَ لَا یُحِبُّ الۡمُعۡتَدِیۡنَ
নিশ্চয়ই আল্লাহ সীমালঙ্ঘনকারীদেরকে ভালোবাসেন না
সীমা লঙ্ঘন করা, নিষ্ঠুরতা, অনাচার — এসব আল্লাহর অপছন্দনীয়। ইসলামে যুদ্ধেরও একটি নৈতিকতা আছে।
এই আয়াতে আল্লাহ তায়ালা মুসলমানদের আত্মরক্ষামূলক যুদ্ধের নির্দেশ দিয়েছেন — তবে শর্তসহ। যুদ্ধ হবে কেবলমাত্র তাদের বিরুদ্ধে যারা ইসলাম ও মুসলমানদের ওপর হামলা চালায়। কিন্তু যুদ্ধের মাঝেও ন্যায়নীতি বজায় রাখতে বলা হয়েছে। ইসলাম শুধু যুদ্ধের অনুমতিই দেয়নি, বরং যুদ্ধের আদব, মানবতা এবং সীমারেখাও নির্ধারণ করে দিয়েছে।
এটি প্রমাণ করে যে, ইসলাম সন্ত্রাস নয়, বরং সুবিচার ও আত্মরক্ষার ধর্ম।
ইসলাম আত্মরক্ষামূলক ও ন্যায্য যুদ্ধের অনুমতি দেয়।
মুসলমানরা কেবল আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধেই লড়বে।
যুদ্ধের সময়ও নৈতিকতা রক্ষা করা জরুরি।
নারী, শিশু, নিরীহ মানুষ, পশুপাখি, পরিবেশ — এগুলোর ক্ষতি করা নিষিদ্ধ।
সীমা লঙ্ঘনকারীকে আল্লাহ ভালোবাসেন না।
এই আয়াতটি হিজরত-পরবর্তী মদিনী পর্বে নাযিল হয়, যখন মুসলমানরা ক্রমাগত মক্কার কাফিরদের দ্বারা নির্যাতিত হচ্ছিল এবং আত্মরক্ষার সুযোগ চাচ্ছিল। তখন প্রথমবারের মতো মুসলমানদের যুদ্ধের অনুমতি দেওয়া হলো — কেবল তাদের বিরুদ্ধে যারা তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করে। এটি মুসলিম উম্মাহর আত্মরক্ষার অধিকার প্রতিষ্ঠা করে।