আয়াতের প্রতিটি অংশের তাফসীর
وَ لَا تَاۡکُلُوۡۤا اَمۡوَالَکُمۡ بَیۡنَکُمۡ بِالۡبَاطِلِ
আর তোমরা একে অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না
এটি একটি সরাসরি নিষেধাজ্ঞা — অসৎ পথে, চুরি, প্রতারণা, সুদ, ঘুষ, জালিয়াতি ইত্যাদির মাধ্যমে সম্পদ গ্রহণ সম্পূর্ণ হারাম।
وَ تُدۡلُوۡا بِهَاۤ اِلَی الۡحُکَّامِ
এবং তা বিচারকদের কাছে উপস্থাপন করো না
অন্যায়ভাবে সম্পদ আত্মসাৎ করতে বিচারকদের মাধ্যমে নিজেদের পক্ষে রায় নেওয়া — এটিও নিষিদ্ধ। এটি আদালতের অপব্যবহার।
لِتَاۡکُلُوۡا فَرِیۡقًا مِّنۡ اَمۡوَالِ النَّاسِ بِالۡاِثۡمِ
যাতে তোমরা মানুষের সম্পদের একটি অংশ গোনাহর মাধ্যমে খেয়ে ফেলো
কারো সম্পদ অন্যায়ভাবে আইনের ফাঁক দিয়ে বা মিথ্যা প্রমাণ দিয়ে আত্মসাৎ করা স্পষ্ট গোনাহ।
وَ اَنۡتُمۡ تَعۡلَمُوۡنَ
যখন তোমরা জানো
জেনে-শুনে অন্যায় করা আরও ভয়াবহ। এটি ইচ্ছাকৃত অপরাধ, যার জন্য জবাবদিহিতা কঠিনতর হবে।
এই আয়াতে ইসলামে অর্থনৈতিক ন্যায়বিচারের গুরুত্ব সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়েছে। এটি মুসলিম সমাজে লেনদেন, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং বিচারিক ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠার জন্য একটি মৌলিক নীতি নির্ধারণ করে। অন্যায়ভাবে অর্থ উপার্জন, ঘুষ, জালিয়াতি, আদালতের মাধ্যমে মিথ্যা মামলা বা পক্ষপাতমূলক রায় নিয়ে সম্পদ ভোগ — এসব সম্পূর্ণরূপে হারাম এবং সমাজ ধ্বংসের কারণ।
এখানে “তোমরা জানো” কথাটি দ্বারা বোঝানো হয়েছে যে, কেউ যদি জেনে বুঝে অন্যায় করে, তবে তার গোনাহ দ্বিগুণ হবে।
অন্যায়ভাবে কারো সম্পদ ভোগ করা সম্পূর্ণ হারাম।
মিথ্যা মামলা বা বিচার ব্যবস্থার অপব্যবহার করে সম্পদ গ্রহণ গোনাহ।
ইসলামে ব্যবসা-বাণিজ্য ও লেনদেনের ক্ষেত্রে সততা অপরিহার্য।
বিচারকের রায় সত্য করলেও অন্যায় সঠিক হয় না।
জেনে-শুনে গোনাহ করা আরও ভয়াবহ অপরাধ।
এই আয়াতটি তখন নাযিল হয়, যখন মুনাফিক বা কিছু অসৎ লোক নিজেদের স্বার্থে মিথ্যা মামলা করে গরিব বা সহজ-সরল লোকদের সম্পদ আত্মসাৎ করত। তারা বিচারকদের ব্যবহার করত নিজ পক্ষে রায় আনতে। তখন আল্লাহ এই আয়াতের মাধ্যমে কঠোরভাবে নিষেধ করলেন এবং সতর্ক করলেন যে, এমন কাজ গোনাহ এবং ধ্বংসের পথ।