আয়াতের প্রতিটি অংশের তাফসীর
وَ قَالُوۡا کُوۡنُوۡا هُوۡدًا اَوۿ نَصٰرٰی تَهۡتَدُوۡا —
ইহুদ ও খ্রিষ্টানরা নবী (সা.)-কে বলেছিল, “তোমরা আমাদের মতই হও, তাহলে মুক্তির পথ পাবে।” তারা তাদের ধর্মীয় গোষ্ঠীর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে বলেছিল, যেন নবী (সা.) তাদের মতবাদ গ্রহণ করেন।
قُلۡ بَلۡ مِلَّۃَ اِبۡرٰهٖمَ حَنِیۡفًا —
আল্লাহ তা’আলা নবী (সা.)-কে আদেশ দিচ্ছেন, বলুন, “না, আমি ইব্রাহীম (আ.)-এর পথ অনুসরণ করি, যিনি ছিলেন সম্পূর্ণ একাত্ম (হানিফ), অর্থাৎ একেশ্বরবাদী এবং সৎপথ অনুসারী।”
وَ مَا کَانَ مِنَ الۡمُشۡرِکِیۡنَ —
ইব্রাহীম (আ.) কখনোই শিরকী ছিলেন না, তিনি কখনো কিস্মতেও আল্লাহর পাশাপাশি অন্য কোনো দেবতার আরাধনা করেননি।
এই আয়াতে আল্লাহ তা’আলা ইহুদ ও খ্রিষ্টানদের সেই দাবিকে প্রত্যাখ্যান করছেন যারা নবী (সা.)-কে তাদের মত হওয়ার আহ্বান জানায়। নবী (সা.) বলেন, তার পথ হচ্ছে নবী ইব্রাহীম (আ.)-এর একেশ্বরবাদী এবং সৎপথের পথে চলা, যা দ্বিধাহীন ও পবিত্র পথ। এই আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ একটি স্পষ্ট ও মহৎ নির্দেশনা দেন যে, ধর্মীয় পরিচয় নয়, বরং একেশ্বরবাদ এবং সরলতা ইসলামের মৌলিক ভিত্তি।
সত্য ধর্ম হলো একেশ্বরবাদ এবং পবিত্রতা যা ইব্রাহীম (আ.)-এর পথ ছিল।
অন্য কোনো ধর্মীয় গোষ্ঠীর অনুকরণ করা ঈমানের ভিত্তি নয়।
আল্লাহর প্রতি সৎ ও একান্ত আনুগত্যই মুক্তির পথ।
ধর্মীয় বিভাজনের বাইরে গিয়ে সত্য পথে চলা প্রয়োজন।
মক্কায় বিভিন্ন ধর্মগোষ্ঠী নবী মুহাম্মদ (সা.)-কে তাদের মত বিশ্বাস গ্রহণের আহ্বান জানাতো, বিশেষ করে ইহুদ ও খ্রিষ্টানরা দাবি করতো, নবী (সা.) তাদের মত হউন। এই আয়াত সেই দাবিকে প্রত্যাখ্যান করে নবী (সা.)-কে স্বতন্ত্র ও একমাত্র সত্য পথ অনুসরণের নির্দেশ দেয়, যা নবী ইব্রাহীম (আ.)-এর পথ।