আয়াতের প্রতিটি অংশের তাফসীর
وَ لَنۡ یَّتَمَنَّوۡهُ اَبَدًۢا
“তারা কখনও তা কামনা করবে না”—
এখানে ‘তা’ বলতে বোঝানো হয়েছে মৃত্যু। ইহুদিরা দাবি করত তারা আল্লাহর প্রিয়জন, কিন্তু তাদেরকে বলা হয়েছে, যদি তা সত্যি হয় তবে তারা যেন মৃত্যুর কামনা করে। কিন্তু প্রকৃত সত্য জানার কারণে তারা কখনোই মৃত্যুর কামনা করবে না।
بِمَا قَدَّمَتۡ اَیۡدِیۡهِمۡ
“তাদের নিজেদের হাত যা অগ্রে পাঠিয়েছে (তার কারণে)”—
তাদের পাপ, অন্যায় ও আল্লাহর অবাধ্যতাপূর্ণ কর্ম—যা তারা পূর্বে করেছে, সেই ভয়েই তারা মৃত্যুকে ভয় পায় এবং কামনা করে না।
وَ اللّٰهُ عَلِیۡمٌۢ بِالظّٰلِمِیۡنَ
“আর আল্লাহ যালিমদের সম্পর্কে খুব ভালোভাবে জানেন”—
আল্লাহ তাদের অন্তরের অবস্থা ও গোপন কৃতকর্ম সব জানেন। তিনি জানেন কারা সত্যিকারভাবে যালিম এবং তাদের উপযুক্ত শাস্তি দেবেন।
এই আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা ইহুদিদের মিথ্যা দাবি খণ্ডন করেছেন। তারা বলত যে তারা আল্লাহর আপনজন, ফলে তারা জান্নাতে যাবে এবং শাস্তি পাবে না। কিন্তু আল্লাহ তাদেরকে চ্যালেঞ্জ দিলেন—যদি তা সত্য হয়, তাহলে তারা যেন মৃত্যু কামনা করে। অথচ তারা জানে তারা কত অপরাধ করেছে, তাই মৃত্যুকে ভয় পায়। এখানে তাদের অন্তরের অবস্থা ও কৃত পাপের জন্য তাদের মুখোশ উন্মোচন করা হয়েছে।
যারা পাপ করেছে, তারা মৃত্যুকে ভয় পায়।
সত্য বিশ্বাসী মৃত্যুকে ভয় পায় না বরং তা আল্লাহর সাক্ষাৎ হিসেবে বিবেচনা করে।
আল্লাহ যালিমদের কর্ম সম্পর্কে অবগত, কেউই তা গোপন রাখতে পারবে না।
মিথ্যা দাবি নয়, বরং বাস্তব ঈমান ও আমলই মুক্তির উপায়।
এই আয়াত ইহুদি সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে নাযিল হয়, যারা নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর সাথে বিতর্ক করত এবং নিজেদের আল্লাহর প্রিয় ও নির্বাচিত জাতি হিসেবে দাবি করত। আল্লাহ তাদের মিথ্যা দাবিকে চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলেন, “তোমরা যদি সত্যবাদী হও, তবে মৃত্যুর কামনা করো।” কিন্তু তারা জানত তাদের কৃতকর্ম, তাই মৃত্যুকে ভয় করত। এটি ছিল তাদের ভণ্ডামির প্রকাশ।