● كَيْفَ
– কীভাবে: এখানে বিস্ময় ও অস্বীকৃতির ভঙ্গিতে বলা হয়েছে—এদের সঙ্গে চুক্তি কীভাবে গ্রহণযোগ্য হতে পারে?
● وَإِن يَظْهَرُوا عَلَيْكُمْ
– আর যদি তারা তোমাদের উপর প্রভাব বিস্তার করে (অর্থাৎ বিজয় লাভ করে): যদি তারা শক্তি অর্জন করে এবং তোমাদের উপর জয়ী হয়, তাহলে তাদের প্রকৃত চরিত্র প্রকাশ পাবে।
● لَا يَرْقُبُوا فِيكُمْ إِلًّا وَلَا ذِمَّةً
– তারা তোমাদের ব্যাপারে আত্মীয়তার কোনো মর্যাদা রাখবে না, কিংবা কোনো চুক্তির সম্মান করবে না: তারা এতটাই নির্মম হবে যে, নিকটাত্মীয়তা ও অঙ্গীকার কোনো কিছুই মানবে না।
● يُرْضُونَكُم بِأَفْوَاهِهِمْ
– তারা মুখে তোমাদেরকে সন্তুষ্ট করে: মুনাফিকির লক্ষণ হিসেবে তারা মুখে সুন্দর কথা বলে, চাতুর্য দেখায়।
● وَتَأْبَىٰ قُلُوبُهُمْ
– কিন্তু তাদের অন্তর বিরূপ থাকে: মুখে ভিন্ন, মনে ভিন্ন। হৃদয় দিয়ে তারা ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধবাদী।
● وَأَكْثَرُهُمْ فَاسِقُونَ
– আর তাদের অধিকাংশই পাপাচারী: তারা সত্য ও ন্যায়ের সীমা অতিক্রমকারী, অবাধ্য।
এই আয়াতে আল্লাহ তায়ালা প্রকাশ করেছেন মুশরিকদের চুক্তিভঙ্গ ও মুনাফেকির স্বভাব। তারা ক্ষমতায় আসলে মুসলমানদের প্রতি কোনো আত্মীয়তা বা চুক্তির রক্ষা করে না। শুধুমাত্র চাতুর্য করে কথা বলে, যেনো মুসলমানরা তাদের থেকে ক্ষতি আশা না করে। কিন্তু বাস্তবে তাদের অন্তরে ঘৃণা ও বিদ্বেষ লুকিয়ে থাকে। সুতরাং তাদের ওপর অন্ধভাবে আস্থা রাখা যায় না।
শত্রু যদি বিশ্বাসযোগ্য না হয়, তাহলে তার সঙ্গে চুক্তির কোনো মূল্য নেই।
মুখে সুন্দর কথা বললেও অন্তরে কী আছে—তা বিবেচনা করতে হবে।
ফাসিকদের চিনতে হলে তাদের কর্ম, আচার-আচরণ ও ভেতরের মনোভাব খেয়াল রাখতে হয়।
ইসলামে আত্মীয়তা বা মিষ্টি কথার ওপর নয়, বরং কর্ম ও চরিত্রের ওপর সম্পর্ক নির্ভর করে।
এই আয়াতের পেছনের ঘটনা হলো, কিছু মুশরিক গোত্র হুদায়বিয়ার চুক্তির মতো শান্তিচুক্তি করলেও পরে তা ভঙ্গ করেছিল। মুখে তারা মুসলমানদের সন্তুষ্ট করত, কিন্তু বাস্তবে বিশ্বাসঘাতকতা করত। তাই এই আয়াতের মাধ্যমে মুসলমানদের সতর্ক করা হয়েছে যে, তাদের মিষ্টি কথায় বিভ্রান্ত না হয়ে বাস্তব আচরণ দেখে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।