● وَ اِنۡ اَحَدٌ مِّنَ الۡمُشۡرِکِیۡنَ اسۡتَجَارَکَ
– যদি মুশরিকদের কেউ তোমার কাছে আশ্রয় চায়: অর্থাৎ যুদ্ধাবস্থায় কোনো মুশরিক যদি নিরাপত্তা ও সত্য জানার সুযোগ পাওয়ার জন্য আশ্রয় প্রার্থনা করে, তাহলে তাকে ফিরিয়ে দিও না।
● فَاَجِرۡهُ حَتّٰی یَسۡمَعَ کَلٰمَ اللّٰهِ
– তবে তাকে আশ্রয় দাও যতক্ষণ না সে আল্লাহর বাণী শুনে নেয়: অর্থাৎ তাকে শান্তভাবে কুরআনের বাণী শোনার সুযোগ দাও যাতে সে হিদায়াত লাভ করতে পারে। ইসলামে এমন উদারতা ও মানবতাবোধের শিক্ষা দেয়া হয়েছে।
● ثُمَّ اَبۡلِغۡهُ مَاۡمَنَهٗ
– তারপর তাকে তার নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দাও: সে ইসলাম কবুল করুক বা না করুক, তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করে তাকে তার স্থানে পৌঁছে দাও। ইসলামী যুদ্ধনীতিতে এটি একটি মহান মানবিক দিক।
● ذٰلِکَ بِاَنَّهُمۡ قَوۡمٌ لَّا یَعۡلَمُوۡنَ
– এটি এজন্য যে, তারা এক অজ্ঞ জাতি: তারা ইসলামের সঠিক বাণী জানে না। তাই তাদেরকে বুঝার সুযোগ দেওয়া জরুরি।
এই আয়াতের মাধ্যমে ইসলামের সহনশীলতা, মানবাধিকার ও শিষ্টাচারের এক অনন্য দৃষ্টান্ত তুলে ধরা হয়েছে। যুদ্ধরত অবস্থায়ও ইসলাম এমন একজন শত্রুকে আশ্রয় দিতে বলে যে সত্য জানতে চায়। এরপর তাকে নিরাপত্তার সাথে তার ঠিকানায় পৌঁছানোর নির্দেশ দেয়। এটা ইসলামের উদারনীতি ও ন্যায়বিচারের পরিচায়ক।
ইসলাম শান্তির ধর্ম — এমনকি শত্রুকেও সত্য জানার সুযোগ দিতে বলা হয়েছে।
যারা ইসলাম জানে না, তাদের প্রতি দয়া ও বুঝানোর পথ অবলম্বন করা উচিত।
আশ্রয়প্রার্থীকে নিরাপত্তা দেওয়া ইসলামের নৈতিক দায়িত্ব।
এই আয়াতটি সূরা আত-তাওবা নাযিলের সময় মক্কা বিজয়ের পর ও তৎপরবর্তী সময়ের প্রেক্ষিতে নাযিল হয়। মুসলমানদের সঙ্গে চুক্তি ভঙ্গকারী মুশরিকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের অনুমতি দেওয়া হয়, তবে যেসব মুশরিক সত্য জানতে চায়, তাদের জন্য এই বিশেষ ছাড় দেওয়া হয় যেন তারা ইসলাম সম্পর্কে জানতে পারে। তাই এটি ইসলামী রাষ্ট্রনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত হয়।